দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় বদল আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। নতুন এই শিক্ষা নীতিতে সবুজ সংকেত দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদল করে করা হল শিক্ষা মন্ত্রক।
কেন্দ্রের পরিকল্পনা হল, দশম ও দ্বাদশ শ্রণিতে আর নতুন করে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। তার পরিবর্তে আনা হচ্ছে ৫+৩+৩+৪ পদ্ধতি। এখানে প্রাথমিককেও আনা হচ্ছে স্কুলের আওতায়। ক্লাস ওয়ান ও ক্লাস টু-কে রাখা হচ্ছে প্রি-প্রাইমারির মধ্যে। এটিকে বলা হচ্ছে ফাউন্ডেশন কোর্স।
নতুন ব্যবস্থায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একটি স্টেজ করা হচ্ছে। এটিকে বলা হচ্ছে সেকেন্ডারি স্টেজ। ফলে ওই স্টেজ চালু হলে এখনকার মতো আর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা হবে না।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৪ বছরের মধ্যে ৪০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে কিছু পরীক্ষা নেবে বোর্ড। বাকি নেবে স্কুল।
এই চার বছরের কোর্স হবে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি। অর্থাত্ পড়ুয়ারা তাদের পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারবে। তবে দেখতে হবে ওই কম্বিনেশন পরবর্তিতে উচ্চশিক্ষায় যেন অসুবিধার কারণ না হয়।
এদিকে, উচ্চশিক্ষায় যারা গবেষণা করবে তাদের ৪ বছরের কোর্স হবে। এমফিল করতে হবে না। স্নাতক স্তরে প্রতি বছরের পর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। দ্বিতীয় বছরের পর দেওয়া হবে ডিপ্লোমা। তৃতীয় ও চতুর্থ বছরের পর দেওয়া হবে স্নাতক সার্টিফিকেট।
আজই অর্থাৎ ২৯ জুলাই ২০২০ নতুন শিক্ষানীতি গৃহীত হল। ফলে ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে পাঠ্যক্রমের। নতুন শিক্ষা নীতিতে, কলা, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান শাখার মধ্যে কোনও বাঁধাধরা বিভাজন আর থাকছে না। এবার থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী একাধিক শাখার অধীনস্থ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গন। গত বছর কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়ালের কাছে ওই প্রস্তাব জমা দেয় কমিটি। সেই খসড়া প্রস্তাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে পোখরিওয়াল।
• কি কি নতুন নিয়ম এলো শিক্ষাক্ষেত্রে ;-
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদলে হলো কেন্দ্রীয় শিক্ষা দপ্তর এবং ৩২ বছর পর আবার নতুন করে শিক্ষানীতি গঠন হলো । উল্লেখযোগ্য কিছু শিক্ষানীতি তুলে ধরলাম -
১) পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত নিজ নিজ রাজ্যে নিজস্ব মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে । চাইলে ছাত্ররা নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে তা অষ্টম (৮) শ্রেণি পর্যন্ত করতে পারে ।
২) নবম(৯) শ্রেণি থেকে দ্বাদশ(১২)শ্রেণি পর্যন্ত চারবছরে আটটি সেমেস্টার দিতে হবে । অর্থাৎ মাধ্যমিকের কোনো ভ্যালু থাকলো না আর ।
৩) এবার থেকে কলেজে ৪ বছরের অনার্স কোর্স করতে হবে ।
৪) উচ্চশিক্ষায় এমফিল উঠে যাচ্ছে ।
৫) স্নাতকোত্তর যে কোনো ক্ষেত্রেই পার্মানেন্টলি একবছর/দুবছর করে দেওয়ার পরিকল্পনা ।
৬) এবার থেকে ছাত্র ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের বিষয়ের কম্বিনেশন রাখতে পারবে একাদশ(১১) শ্রেণি থেকেই । যেমন, কেউ চাইলে পদার্থবিদ্যা(Physics) বা কেমিষ্ট্রির (Chemistry) এর সাথে Fashion Designing নিয়েও পড়তে পারে ।
৭) নবম(৯) শ্রেণি থেকেই ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের বিষয় চয়েস করতে পারবে ।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ।।
No comments:
Post a Comment